শিশুর প্রথম ও প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে তার পরিবার। প্রথম শিক্ষক মা-বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। শিশু ধীরে ধীরে সব কিছু শিখে তার পরিবেশ থেকে। একজন শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য তার মা-বাবা উভর্য়েই সমান সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পরিবারের শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি শুরু হয়ে যায়, তার স্কুলজীবন ও গুরু শিক্ষা। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের আত্মবিশ্বাসী, সুন্দর ও সুস্থ মনের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে মা-বাবা, পরিবার ও শিক্ষকের ভূমিকাই প্রধান। বন্ধু ও সমবয়সীদের সাহচর্যেও শিশু শিক্ষা অর্জন করে।
প্রতিটি শিশুর দক্ষতা ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে তার নিজস্ব শিক্ষা গ্রহণ ক্ষমতা রয়েছে। তার মস্তিস্কে নতুন তথ্য ধারণ ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি। সে স্বচ্ছ দৃষ্টিতে পৃথিবীকে দেখে। অধিকাংশ মনোবৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, শিশু নিজে নিজেই শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম। এটি তার জন্মগত সক্ষমতা। অনেকে মনে করেন ২/১ বছরের ছোট্র শিশু, কিছুই বোঝে না, আসলে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। মাতৃগর্ভ থেকেই শিশুর শিক্ষাজীবনের শুরু হয়, শিশুর জীবনের প্রথম পাঁচ সাত বছর শিক্ষা ও ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জন্মের পর থেকে সে অসংখ্য বিষয় ও আচরণ শিখে থাকে। শিক্ষা মানে শুধুমাত্র স্কুলের বা একাডেমিক শিক্ষা নয়, শিক্ষার অর্থ আরো ব্যাপক। শৈশবেই শিশু অনেক সুক্ষ সুক্ষ বিষয় খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে, শোনে ও বোঝে।
বড়দের কাজ হচ্ছে তার সামনে নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা ও সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণে তাকে সাহায্য করা। যদি আমরা তাকে সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পরিবেশ পরিস্তিতি ও শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করতে না পারি তবে সে তার স্বভাবজাত কারণেই যা পাবে তাই শিখবে। শিশুর শিক্ষা কখনো থেমে থাকে না, শুদ্ধ ও ভুল শিক্ষা যা পাবে সে তাই শিখবে। প্রতিটি শিশুর বয়স, বিকাশের পর্যায় ও বুদ্ধির পরিপক্কতা অনুসারে তাকে পরিচালনা করা অবশ্য প্রয়োজন। এই সম্পর্কে অভিভাবক ও শিক্ষকদের শিশু-কিশোরদের প্রতি নিজ নিজ ভূমিকা সম্পর্কেও সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন। সন্তানের সুষ্ঠু মানসিক বিকাশের জন্য মা-বাবা ও শিক্ষকদের নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।